রেড কোরাল কুকরি বিরল প্রজাতির একটি সাপ। উজ্জ্বল কমলা ও প্রবাল লাল বর্ণের এই প্রজাতিটির বৈজ্ঞানিক নাম ওলিগোডন খেরেনসিস (Oligodon Kheriennsis)।
গত তিন মাসে দেশে পাঁচ বার দেখে মিলেছে এ সাপের। পাঁচ বারই দেখা গেছে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে। বিশ্বেও লোকালয়ে খুব কমই দেখা মেলে এই সাপের।
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার কালিয়াগঞ্জ মোটাপাড়া এলাকার একটি রাস্তা থেকে রোববার রাতে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় রেড কোরাল কুকরিকে। বন্যপ্রাণী সংরক্ষক ও উদ্ধারকারী সহিদুল ইসলাম (বিএসএস) এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন সোমবার সাপটি অবমুক্ত করা হবে।
সহিদুল বলেন, ‘মানুষ এখন আগের থেকে অনেকটা সচেতন হয়েছেন। তারা সাপটি দেখতে পেয়ে না মেরে আটকে রেখে আমাদের ফোন দিয়েছেন। ইতোমধ্যে এই সাপটি বাংলাদেশের রেকর্ডসহ আন্তর্জাতিক গবেষণা পত্রে বিরল হিসেবে প্রকাশ পেয়েছে।’
এর আগে, গত ৭ ফেব্রুয়ারি একই এলাকা থেকে আহত অবস্থায় প্রথম উদ্ধার হয় এই প্রজাতির একটি সাপ। পরে ২৬ ফেব্রুয়ারি সদর উপজেলার চাকলাহাট এলাকা থেকে দ্বিতীয় বার মৃত অবস্থায়, ২০ এপ্রিল টুনিরহাট এলাকা থেকে জীবিত এবং ১০ মে একই এলাকা থেকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার হয় আরও চারটি লাল প্রবাল কুকরি।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ভেনম রিসার্চ সেন্টারের প্রশিক্ষক ও সাপ গবেষক বোরহান বিশ্বাস রোমন জানান, উজ্জল কমলা ও লাল প্রবাল রঙের সাপটি মৃদু বিষধারী ও নিরীহ প্রকৃতির। এটি পৃথিবীর দুর্লভ সাপদের একটি। হিমালয়ের পাদদেশে এদের পাওয়া যায়।
তিনি আরও জানান, সাপটি নিশাচর এবং বেশির ভাগ সময় মাটির নিচেই থাকে। মাটির নিচে কেঁচো, লার্ভা, পিপড়ার ডিম ও উইপোকার ডিম খেয়ে জীবনধারণ করে এটি। নরম মাটি পেলে মাটি খুঁড়ে ভিতরে চলে যাওয়ার প্রবণতা রয়েছে এর। মাটির ভিতরে থাকার জন্য রোসট্রাল স্কেল (সাপের মুখের সম্মুখ ভাগে অবস্থিত অঙ্গবিশেষ) ব্যবহার করে সাপটি।
সর্বপ্রথম সাপটির দেখা মেলে ১৯৩৬ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের খেরি জেলায়। ওই বিভাগের নাম অনুযায়ী সাপটির বৈজ্ঞানিক নামকরণ করা হয়। ৮২ বছর পর ২০১৯ সালে আবারও খেরি জেলায় দেখা গিয়েছিল লাল প্রবাল সাপটি।
এ ছাড়া নেপালের মহেন্দ্রনগর, চিতোয়ান ন্যাশনাল পার্ক, ভারতের নৈনিতাল, জলপাইগুড়ির বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন সময়ে দেখা যায় সাপটিকে।